লুল্লু ভুতের রহস্যময় দরজা গল্প
লুল্লু ভুতের রহস্যময় দরজা গল্প |
এক ভুতুড়ে বাড়িতে লুল্লু ভুতের বাস। পুরোনো, ধুলো-মাখা আসবাবপত্র, জীর্ণ দেয়াল, আর অন্ধকার ঘর - লুল্লু ভুতের একমাত্র সঙ্গী। একদিন লুল্লু ঘুরতে ঘুরতে বাড়ির এক অন্ধকার কোণে লুকিয়ে থাকা রহস্যময় দরজা খুঁজে পায়। দরজার কাঠ পুরোনো ও ক্ষয়ে যাওয়া, আর দরজার ধাতব হাতলটা মরিচা ধরে জং ধরে আছে। লুল্লু ভুতের মনে কৌতূহল জাগে। দরজার ভেতরে লুকিয়ে আছে কি ভয়ঙ্কর রহস্য?
লুল্লু ভুত দরজার কাছে এগিয়ে যায়। ভয়ে তার হৃৎস্পন্দন দ্রুত হতে থাকে। দরজার হাতল ধরে লুল্লু ভুত দরজা খুলতে চায়। কিন্তু দরজা ভারী ও শক্ত। লুল্লু ভুত তার পুরো শক্তি দিয়ে দরজা ঠেলতে থাকে। দীর্ঘক্ষণ চেষ্টার পর অবশেষে দরজা খুলে যায়।
দরজার ভেতরে অন্ধকার। লুল্লু ভুত কিছুই দেখতে পাচ্ছে না। সে সাবধানে পা ফেলে দরজার ভেতরে প্রবেশ করে। ভেতরে এক অদ্ভুত ঘর। ঘরের দেয়ালে আঁকা অদ্ভুত চিত্র, আর মেঝেতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অজানা জিনিসপত্র। লুল্লু ভুত ঘরের ভেতরে ঘুরতে থাকে।
হঠাৎ লুল্লু ভুতের পেছনে থেকে দরজা বন্ধ হয়ে যায়। লুল্লু ভুত ভয়ে চিৎকার করে ওঠে। ঘরের অন্ধকারে লুল্লু ভুত কিছুই দেখতে পাচ্ছে না। সে বারবার দরজায় ধাক্কা দিতে থাকে। কিন্তু দরজা খুলছে না। লুল্লু ভুত ভয়ে কাঁপতে থাকে।
এমন সময় লুল্লু ভুতের মনে পড়ে তার জাদুর টুপি। লুল্লু ভুত তার জাদুর টুপি থেকে আলো বের করে। আলোর আলোয় লুল্লু ভুত দেখতে পায় ঘরের দেয়ালে আঁকা চিত্রগুলো আসলে জীবন্ত। চিত্রগুলো লুল্লু ভুতের দিকে তাকিয়ে হাসছে। লুল্লু ভুত ভয়ে আরও জোরে চিৎকার করে ওঠে।
হঠাৎ ঘরের এক কোণ থেকে এক বৃদ্ধা ভুত এগিয়ে আসে। বৃদ্ধা ভুত লুল্লু ভুতকে বলে, "ভয় পেয়ো না। আমি তোমাকে কষ্ট দেব না।"
লুল্লু ভুত বৃদ্ধা ভুতকে জিজ্ঞেস করে, "তুমি কে? আর এই রহস্যময় দরজার ভেতরে তুমি কী করছো?"
বৃদ্ধা ভুত বলে, "আমি এই বাড়ির প্রাক্তন মালিক। অনেক বছর আগে আমি মারা গেছি। কিন্তু আমার কিছু অসমাপ্ত কাজ ছিল। তাই আমি এই রহস্যময় দরজার ভেতরে আটকা পড়েছিলাম।"
লুল্লু ভুত বৃদ্ধা ভুতকে জিজ্ঞেস করে, "তোমার অসমাপ্ত কাজ কি?"
বৃদ্ধা ভুত বলে, "আমার একটা মূল্যবান রত্ন ছিল। আমি মারা যাওয়ার আগে রত্নটা এই বাড়ির কোথাও লুকিয়ে রেখেছি। কিন্তু আমি মারা যাওয়ার পর রত্নটা কোথায় লুকিয়েছিলাম ভুলে গেছি।"
লুল্লু ভুত বলে, "আমি তোমাকে রত্ন খুঁজে পেতে সাহায্য করব।"
লুল্লু ভুত ও বৃদ্ধা ভুত রহস্যময় দরজার ভেতরে রত্ন খুঁজতে থাকে। তারা ঘরের প্রতিটি কোনা খুঁজে দেখে। কিন্তু রত্নের কোনো সন্ধান পায় না।
হঠাৎ লুল্লু ভুতের মনে পড়ে তার জাদুর টুপি। লুল্লু ভুত তার জাদুর টুপি দিয়ে ঘরের দেয়াল স্ক্যান করে। স্ক্যানে লুল্লু ভুত দেখতে পায় ঘরের এক দেয়ালে লুকিয়ে থাকা গোপন তৈরি।
লুল্লু ভুত ও বৃদ্ধা ভুত গোপন তৈরি খুলে দেখে। তৈরির ভেতরে লুকিয়ে ছিল বৃদ্ধা ভুতের হারিয়ে যাওয়া মূল্যবান রত্ন। বৃদ্ধা ভুত রত্ন দেখে আনন্দে চিৎকার করে ওঠে।
বৃদ্ধা ভুত লুল্লু ভুতকে ধন্যবাদ জানায়। বৃদ্ধা ভুত লুল্লু ভুতকে বলে, "তুমি আমার অসমাপ্ত কাজ শেষ করতে সাহায্য করেছো। তুমি একজন সাহসী ও দয়ালু ভুত।"
লুল্লু ভুত বৃদ্ধা ভুতকে জিজ্ঞেস করে, "তুমি কি এখন এই রহস্যময় দরজার ভেতরে আটকা থাকবে না?"
বৃদ্ধা ভুত বলে, "না। আমার অসমাপ্ত কাজ শেষ হয়েছে। এখন আমি শান্তিতে যেতে পারব।"
বৃদ্ধা ভুত রহস্যময় দরজার ভেতর থেকে চলে যায়। লুল্লু ভুত দরজার দিকে তাকিয়ে থাকে। লুল্লু ভুত জানে, সে আবারো একা হয়ে গেছে। কিন্তু লুল্লু ভুতের মনে আনন্দ। সে জানে, সে একজন সাহসী ও দয়ালু ভুত। লুল্লু ভুত ভবিষ্যতে আরও অনেক রহস্য সমাধান করবে।
গল্পের শেষ
কৌতুহলী?
লুল্লু ভুতের আরও মজার ও রোমাঞ্চকর গল্প পড়তে [বইয়ের লিঙ্ক] বইটি সংগ্রহ করুন।